রাসূল (সঃ) বলেছেন, 

কিয়ামতের দিন মানুষকে উলঙ্গ দেহে ও খাতনাহীন অবস্থায় কবর থেকে হাশরের ময়দানে জমায়েত করা হবে।' 

একথা শুনে আমি জিজ্ঞেস করলাম, 

'হে আল্লাহর রাসুল! 

নারী পুরুষ সকলেই কি উলঙ্গ হবে? 

তারা কি একে অপরের প্রতি তাকাবে? (এরূপ হলে তো খুবই লজ্জার বিষয়)।' 

উত্তরে তিনি বললেন, 'হে আয়েশা! কিয়ামতের দিনটি এত কঠিন ও বিপদময় হবে যে, 

মানুষের মনে একে অপরের প্রতি তাকাবারও খেয়াল হবে না।’ 

(বুখারি-মুসলিম)


কিয়ামতের দিন 

রাসূল (স:) থাকবেন সবচেয়ে ব্যস্ত মানুষ। পুলসিরাত, মিযানের পাল্লা,হাউসে কাউসার একসাথে ছুটাছুটি করতে থাকবেন 'ইয়া উম্মাতি'! 'ইয়া উম্মাতি'! বলে। 

জিব্রাইল আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনাকে তুলবেন কবর থেকে। 

রাসূল (স:) জিজ্ঞেস করবেন,'কী ব্যাপার জিব্রাইল! আমার উম্মাত কী উঠেছে?' 

ওইদিকে আবার মূসা কালিমুল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরশের খুটি ধরে আছেন আর বলছেন 'ইয়া নাফসি! ইয়া নাফসি!' 

সেদিন ইমামুল আম্বিয়ার মুখে থাকবে 'উম্মাতি! উম্মাতি!' আর, সেদিন তাঁর পায়ে থাকবে দৌড় আর মুখে থাকবে আওয়াজ!

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইসি ওয়াসাল্লাম খুব অশান্ত ছোটাছুটি করছেন। হঠাৎ উনার মনে পড়ে, আমার উম্মাত ক্লান্ত, পিপাসার্ত নয়তো! ছুটে যান হাউজে কাউসারে। হ্যাঁ, এইতো পিপাসার্ত উম্মাত। নিজের হাতে হাউজে কাউসার থেকে পানি পান করাবেন আর বলবেন পান করো। আর কখনো তৃষ্ণার্থ হবে না।

হঠাৎ মনে হবে মিযানের সামনে দাড়ানো উম্মাতের কথা। ছুটে যাবেন সেখানে। দেখবেন উম্মাতের বাম পাল্লা ভারি হয়ে যাচ্ছে। 

পেরেশান, তিনি হয়রান!!!

অতঃপর দৌড়ে যাবেন দুরূদের পিটারার সামনে। যেখানে তাঁর জন্য পড়া দুরূদ উম্মাতের নামসহ একটা বক্সের মধ্যে জমা আছে। সেখান থেকে দুরূদ নিয়ে ডান পাল্লায় দিতে থাকবেন যতক্ষণ না তা বাম পাল্লা থেকে ভারি হয়ে যায়। 

মাক্বামে মাহমুদের পাশে উনার জন্য আসন পাতা থাকবে৷

আল্লাহ বলবেন۔ 'হে নবী বসুন।'

তিনি উত্তরে বলবেন, 'না বসবো না।' 

আল্লাহ্ বলবেন - 'জান্নাতে যান!' 

নবী (স:) বলবেন- 'না, যাবো না!' 

আল্লাহ্ বলবেন- 'জান্নাতের পোশাক পড়ুন!' 

নবী (স:) বলবেন- 'না, পড়বো না!' 

আল্লাহ্ বলবেন - 'বোরাকে উঠুন!' 

নবী (স:) বলবেন- 'না, উঠবো না। আমি চলে গেলে উম্মাতের কী হবে?'

কিয়ামতের দিন মানুষ তার ভাই থেকে, সন্তান থেকে, পিতা-মাতা থেকে পালিয়ে বেড়াবে। 

কিয়ামতের দিন এক রাসূল (স:) ছাড়া কেউ কাউকে চিনবেনা। 

অতএব রাসূল এর সূন্নাত ও আদর্শ অনুসারে জীবন তৈরি করে তাঁর সুপারিশ পাওয়ার যোগ্য উম্মত হওয়ার চেষ্টা করা উচিত।

এছাড়া কোন গত্যন্তর নেই। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন!


Comments

Popular Posts